ভিক্টর গিয়োকেরেস – আমাদের নিজের মানুষ
অনেক অপেক্ষা, অনেক জল্পনা-কল্পনা, অনেক “হবে না” আর “হয়তো”র ভিড়ে—শেষ পর্যন্ত যা গুনারসদের হৃদয় চেয়েছিল, তা-ই হলো। ভিক্টর গিয়োকেরেস এখন আর্সেনালের একজন হয়ে গেছেন। রাত ২টা, সিঙ্গাপুর সময়—যখন অনেকেই ঘুমিয়ে, তখন ক্লাব আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দিল যে "বিগ ভিক" এখন আমাদের।
সময়টা অদ্ভুত হলেও খবরটা ছিল নিঃসন্দেহে হৃদয় কাঁপানো। অবশেষে সেই নামটা দেখা গেল ক্লাবের অফিসিয়াল ঘোষণায়, সেই হাসিটা দেখা গেল জার্সির গর্বে, আর আমাদের চোখে জ্বলজ্বল করল নতুন আশার আলো।
এই ট্রান্সফার নিয়ে বড় ভূমিকা রেখেছেন ক্লাবের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর আন্দ্রেয়া বার্তা। তিনি বলেন:
“আমরা দারুণ সন্তুষ্ট এমন একটি অসাধারণ ডিল সম্পন্ন করতে পেরে। ভিক্টর এমন একজন খেলোয়াড়, যার মধ্যে আছে পরিশ্রম, বুদ্ধিমত্তা, শারীরিক দৃঢ়তা এবং জেতার ক্ষুধা—যা আর্সেনাল এখন চায়।”
এদিকে মিকেল আর্তেতাও স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন:
“ভিক্টরের মধ্যে এমন গুণাবলি রয়েছে যা একজন টপ লেভেল স্ট্রাইকারের জন্য দরকার। তার গোল করার দক্ষতা, বক্সের ভিতরে মুভমেন্ট, আর সুযোগকে কাজে লাগানোর হার তাকে অনন্য করে তোলে।”
গিয়োকেরেস নিজেও বললেন:
“আমি সবসময় গোল করতে চাই। আর্সেনালের জার্সি পরে গোল করতে পারা—এটা হবে আমার জীবনের এক অসাধারণ অনুভূতি। এই ক্লাব, এই ব্যাজ, এই সমর্থকদের সামনে পারফর্ম করতে আমি আর অপেক্ষা করতে পারছি না।”
আসলে এই কথাগুলো শুধু একটা ট্রান্সফার ঘোষণার শব্দ নয়—এগুলো একেকটা স্বপ্নের প্রতিধ্বনি। ভিক্টর কেবল একজন স্ট্রাইকার না, তিনি এখন সেই বিশ্বাসের প্রতীক যা এই গ্রীষ্মে আমরা আকড়ে ধরে রেখেছিলাম। তিনি এসেছেন আমাদের জার্সি গায়ে জেতাতে, ভালোবাসা দিতে, এবং সবচেয়ে বড় কথা—নিজেকে উজাড় করে দিতে।
হ্যাঁ, কিছু বিতর্ক ছিল। স্পোর্টিং-এর সঙ্গে সম্পর্কের টানাপোড়েন, অনুশীলনে না যাওয়া, এবং প্রেসিডেন্টের সঙ্গে কথাবার্তা। তবে এসব এখন অতীত। যতই ক্লাব তাকে ছাড়তে না চেয়ে কঠিন পথ দেখাক, শেষ পর্যন্ত গিয়োকেরেস হৃদয়ে যা চেয়েছিলেন, তাই পেয়েছেন—আর্সেনাল।
এটা শুধু একটা চুক্তি না, এটা একটা বার্তা। ভিক্টরের মতো একজন খেলোয়াড়, তার ক্যারিয়ারের মধ্যগগনে, নিজে থেকে এই ক্লাবে আসতে চেয়েছেন। সে বুঝেছে, এখানে কিছু গড়ে তোলা যায়। সে জানে, আর্সেনালের ইতিহাস, আর্সেনালের ভবিষ্যৎ—এ দুটি মিলিয়ে তৈরি হবে এক নতুন অধ্যায়।
আজ নিউক্যাসলের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুরে ম্যাচ তিনি এখনও খেলবেন না। কিন্তু জানি, দূর থেকে হলেও, “বিগ ভিক” মনেপ্রাণে আর্সেনালই দেখছেন, নিজের নামটা সেই গোলস্কোরার লিস্টে তোলার স্বপ্নে বিভোর।
২৭ বছর বয়সে এসে এমন এক ক্লাবে যোগ দেওয়া, যেখানে প্রতিটি ম্যাচে লক্ষ লক্ষ চোখ তাকে খুঁজবে, এই দায়িত্বকে সে কীভাবে বয়ে নিয়ে যায়, সেটাই দেখার বিষয়। তবে একথা নিশ্চিত—ভিক্টর গিয়োকেরেস এসেছেন লড়তে, জিততে, এবং হৃদয় দিয়ে খেলার জন্য।
স্বাগতম, ভিক্টর।
এখন থেকে তুমি আমাদের—আমাদের স্বপ্নের একজন।
ভিক্টর গিয়োকেরেস, একজন গুনার।